Saraswati-Lakshmi Puja: দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই সরস্বতী-লক্ষ্মী পূজা! শালবনীর এই প্রাচীন পূজার কাহিনী গায়ে কাঁটা দেবে

This Saraswati-Lakshmi Puja of Shalbani has been going on for more than 150 years: বসন্ত পঞ্চমী মানেই চারিদিকে পলাশ ফুল বাসন্তী ফুলের সমারহ। বাঙালির তরুণ প্রজন্মের কাছে এই বসন্ত পঞ্চমীর আলাদাই একটা ভাইব রয়েছে। এই বসন্ত পঞ্চমী তিথিতেই পালিত হয় বাগদেবী সরস্বতী পূজা। এদিন স্কুল, ক্লাব সহ বহু বাড়িতেই বীণাপানির আরাধনা করা হয়। তেমনই এক অন্যতম সরস্বতী পূজা হল শালবনীর মহাশোল গ্রামের সরস্বতী পূজা। প্রায় দেড়শ বছরেরও বেশি পুরোনো। শুধু সরস্বতী নয়, এই বসন্ত পঞ্চমীতে এখানে মা সরস্বতী ও লক্ষ্মী (Saraswati-Lakshmi Puja) দুই দেবীরই আরাধনা করা হয়। ৭ দিন ধরে এই পূজাকে ঘিরে চলে নানান আচার অনুষ্ঠান।

মেদিনীপুরের শালবনীর মহাশোল গ্রামের এই সরস্বতী-লক্ষ্মী পূজা (Saraswati-Lakshmi Puja) হল সিংহ পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যশালী পূজা। প্রতি বছর বসন্ত পঞ্চমীতে অনুষ্ঠিত হয়। সাথে ২৪ প্রহরব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই পুজোকে ঘিরে চলে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। যার মধ্যে অন্যতম হলো সংবর্ধনা জানানো।

শালবনীর মহাশোল গ্রামের এই সরস্বতী-লক্ষ্মী পূজায় পূজা প্রচলনকারীদের সংবর্ধনা জানানো হয়। যারা মৃত তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সেই সংবর্ধনা তুলে দেওয়া হয়। মরণোত্তর সংবর্ধনা দেওয়া হয় সিংহ পরিবারের পূর্বপুরুষ বগলা প্রসাদ সিংহ ও লছমন সিংহকে। যার আয়োজন করেন তরুণ প্রজন্মরা। এছাড়াও এই পূজায় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংবর্ধনা জানানো হয় বর্তমান সরস্বতী-লক্ষ্মী পূজা পরিচালনাকারী ব্যক্তি চিত্তরঞ্জন সিংহ, অরুণ সিংহ, স্বপন সিংহ, নিরঞ্জন সিংহ, নেপাল চন্দ্র সিংহ এবং সুব্রত সিংহকে।

আরো পড়ুনঃ পুজোর জন্য অতি পবিত্র তুলসী গাছ! কিন্তু ভুল করেও এ সময় ভাঙবেন না ডাল!

এর পাশাপাশি সংবর্ধনা দেওয়া হয় কীর্তন শিল্পী নাগেশ্বর মাইতিকে। যিনি খুব ছোট থেকেই এই মন্দিরে আসেন। সেই এলাকার বিশিষ্ট কীর্তন শিল্পী হিসেবে পরিচিত তিনি। এদের সাথে পুরোহিত সঞ্জয় চ্যাটার্জি, ছড়িদার সুকদেব দাস এবং ক্ষৌরকার শম্ভু মানা এবং বাবুল মানা যারা এই পূজায় প্রাণপণ পরিশ্রম করেন তাদেরও সংবর্ধনা তুলে দেওয়া হয়। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংবর্ধনা হিসেবে দেওয়া হয় পুষ্পস্তবক, শাল এবং মিষ্টি। শুধু সংবর্ধনা জানানো হয় না, প্রত্যেক বছর সংবর্ধনা জানানোর পাশাপাশি গ্রামের তরুণ প্রজন্মরা প্রতিজ্ঞা করেন তারা আগামী বছরগুলিতেও এই পূজা যেন চালিয়ে যেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ একনজরে দেখে নিন দেশের দশটি জাগ্রত শিব মন্দির সম্পর্কে

তবে শালবনীর এই সরস্বতী-লক্ষ্মী পূজা (Saraswati-Lakshmi Puja) আরম্ভ প্রসঙ্গে পুরোহিত সঞ্জয় চ্যাটার্জী বলেন, শোনা যায় পূর্বে এই মন্দির প্রাঙ্গনে গ্রামের কয়েকজন বয়স্ক ব্যক্তি রাত্রিযাপন করতেন। তাদের মধ্যে কাউকে মাঘ মাসের একদিন গভীর রাতে দুই দেবী রূপী বোন স্বপ্নাদেশ দিয়ে এই স্থানে পুজো শুরুর আদেশ দেন। যেহেতু সেই সময় মাঘ মাস আর মাঘ মাস মানে মা সরস্বতীর আরাধনা। তাই তখন থেকেই এই স্থানে সরস্বতী-লক্ষ্মী দুই বোনের একসাথে পূজা করা হয় বসন্তে পঞ্চমী তিথিতে। মায়ের আরাধনার পর ২৪ প্রহর ব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। যা সেই প্রাচীন শতাব্দী থেকে চলে আসছে। পুজোকে ঘিরে এক সপ্তাহ ধরে এখানে মেলা বসে। নানা ধরনের স্টল বসানো হয়। বহু মানুষের সমাগম ঘটে।