Puri Jagannath Temple: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের এই সব রহস্য অবাক করবে আপনাকে

All these secrets of Jagannath temple in Puri will surprise you: হিন্দুদের বিভিন্ন তীর্থস্থানের মধ্যে অন্যতম হলো পুরীর জগন্নাথ মন্দির। পুরীর সাথে বাঙ্গালীর আবেগ জড়িয়ে আছে অন্যভাবে। সারা বছর বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এই পবিত্র তীর্থস্থানে। শুধুমাত্র ভারতীয় নয় বহু বিদেশি পর্যটকও এখানে ভিড় জমান। ভক্তদের বিশ্বাস পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে (Puri Jagannath Temple) শ্রীকৃষ্ণ তার দাদা বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রাকে নিয়ে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এই মন্দিরে কোন কিছু কামনা করলে তা অবশ্যই পূরণ হয়। ৮০০ বছরের এই প্রাচীন মন্দির নানারকম রহস্য ঘেরা। আসুন দেরি না করে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।

মন্দিরের ছায়া দেখতে পাওয়া যায় না

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি (Puri Jagannath Temple)প্রায় ৪ লক্ষ বর্গফুট এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এবং ২১৪ ফুট উঁচু। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এত বড় মন্দিরের চূড়ার কোনও ছায়া দেখা যায় না। এ সত্যি কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।

মহাপ্রসাদ তৈরি

আপনারা কি জানেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রান্নাঘর বিশ্বের বৃহত্তম রান্নাঘর? জগন্নাথদেবের জন্য যে মহাপ্রসাদ তৈরি হয় তার প্রক্রিয়াও অন্যতম। মাটির তৈরি উনুনে কাঠের আঁচ দিয়ে একটি পাত্রের উপর আরেকটি পাত্র করে পরপর ৭টি পাত্র বসিয়ে রান্না করা হয়। কিভাবে এই রান্না সম্পন্ন হয় তা আজও কেউ জানতে পারেনি। সবেচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, প্রথমে উপরের পাত্রের রান্না সেদ্ধ হয়। তারপর এক-এক করে নীচের পাত্রগুলির রান্না হয়। উনুনের উপর যে পাত্রটি বসানো, সেটির রান্না সবশেষে সম্পন্ন হয়। মন্দিরে যতই ভক্ত আসুক, কখনও প্রসাদ কম পড়ে না।

আবাধা মহাপ্রসাদ

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে (Puri Jagannath Temple) জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাকে ৫ দফায় ভোগ দেওয়া হয়। এমনকি রোজ ৫৬ ভোগ দেওয়া হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভাত, ডাল, সবজি থেকে মিষ্টি, বাদাম-সহ নানা ধরনের খাবার। মন্দির চত্বরে আলাদা বাজারে এই ভোগ কিনতে পারেন ভক্তরা।

চক্রের দিক

এই মন্দিরের চূড়ায় একটি চক্র লাগানো রয়েছে। আর সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, যে কেউ যে কোনও প্রান্ত থেকে ওই চক্রের দিকে তাকালে মনে হবে চক্রটি তাঁর দিকেই ঘোরানো। চক্রটির ওজন প্রায় এক টন। কিন্তু ১২ শতকে মন্দিরটি তৈরির সময় এই চূড়ায় কিভাবে বসানো হয়েছিল এই চক্র? সেই সময় প্রযুক্তি বিশেষ উন্নত ছিল না। ফলে এই রহস্যের কোন উদঘাটন করা যায়নি।

মন্দিরের উপরে পাখি উড়তে দেখা যায় না

সাধারণত আপনারা দেখে থাকবেন যে কোনও উঁচু বাড়ি হোক বা মন্দির, তার উপর দিয়ে পাখি উড়ে যায়। কিন্তু, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের (Puri Jagannath Temple) চূড়ায় কখনও কোনও পাখি বসতে দেখা যায় না। এমনকি মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও পাখি উড়তে দেখা যায়নি। এই অলৌকিকতা এবং রহস্যময়তা সত্যিই আশ্চর্যজনক।

আরো পড়ুনঃ বৃহস্পতির কৃপায় ভাগ্য বদলাতে চলেছে এই তিন রাশির; টাকা এবং পদোন্নতি দুই হবে খুব শীঘ্রই

উল্টোদিকে ধ্বজা ওড়ে

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি (Puri Jagannath Temple)প্রায় ৪৫ তলা বাড়ির সমান উঁচু এবং মন্দিরের একেবারে চূড়ায় একটি পতাকা লাগানো আছে। তবে রহস্য হলো যে দিকে হাওয়া চলে সবসময় তার বিপরীত দিকে পতাকাটি ওড়ে। প্রতি বছর মন্দিরের পুরোহিত চূড়ায় উঠে পতাকাটি বদলান। কিন্তু, হাওয়ার সঙ্গে পতাকা ওড়ার দিক বদল হয় না।

ঢেউয়ের শব্দ

যারা পুরী ঘুরতে গেছেন তারা মোটামুটি সবাই জানেন যে পুরীর সমুদ্রের গর্জন আসলে কি রকম। অনেক দূর পর্যন্ত সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়। তবে কখনোই জগন্নাথ মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করলে সমুদ্রের গর্জন কিংবা ঢেউয়ের কোনও শব্দ শোনা যায় না। কথিত আছে, দেবী সুভদ্রা চেয়েছিলেন মন্দিরের ভিতর নীরবতা বজায় থাকবে। সেই কারণেই মন্দিরের ভিতর সমুদ্রের শব্দ শোনা যায় না।

আরো পড়ুনঃ ভগবানের না এই মন্দির হলো খলনায়কদের; অবাক হলেও এটাই সত্যি

কাঠের মূর্তি

প্রতি ৮, ১২ ও ১৯ বছর বাদে বাদে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের (Puri Jagannath Temple)বিগ্রহ বদল হয়। পবিত্র নিম গাছের কাঠ দিয়ে জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রার নব কলেবর করা হয়। পুরানো মূর্তি কোইলি বৈকুণ্ঠের কাছে পুঁতে দেওয়া হয়। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো, জগন্নাথদেবের নবকলেবরের জন্য যে গাছটি নির্বাচিত করা হয়, সেটি মন্দির কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত এক কাঠুরে গোপনে ২১ দিন ধরে কাটেন। কেউ জানতেও পারেন না।

মূর্তি বদল

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে (Puri Jagannath Temple) বিশেষ নিয়ম মেনে তবে নব কলেবরের পর মূর্তি বদল করা হয়। জগন্নাথ মন্দিরের প্রবীণ পুরোহিতের চোখ বেঁধে, হাতে দস্তানা পরিয়ে মূর্তি বদল করা হয়। এমনকি গোটা শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় এবং মন্দিরের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। যদি কেউ মূর্তি বদল করা কেউ দেখে ফেললে তার বড় ক্ষতি হতে পারে, চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

হাওয়ার গতি

সকলেরই জানা আছে যে উপকূলবর্তী এলাকায় দিনের বেলা সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে এবং রাতে স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে হাওয়া চলে। কিন্তু, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কাছে দিনে ও রাতে উল্টোদিকে হাওয়া চলে। বিজ্ঞানে এর কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।