Hanumanji in Kurukshetra: রামভক্ত হনুমানজি উপস্থিত ছিলেন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধেও! অর্জুনের রথে থেকেই পালন করেন নিজের দায়িত্ব

Rama Bhakta Hanumanji was also present in Kurukshetra battle field: রামায়ণের কাহিনীতে প্রধান চরিত্র রামচন্দ্র ছাড়াও যে চরিত্র গুলি সবথেকে বেশি আমাদের নজর কাড়ে, তার মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বীর হনুমান (Hanumanji in Kurukshetra)। তাকে অষ্ট চিরঞ্জীবীর মধ্যে একজন বলা হয়। পবনপুত্র বীর হনুমান যেমন ত্রেতা যুগে শ্রী রামচন্দ্র সহায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠিক তেমনি দ্বাপর যুগে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময়ও তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। জানা যায় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় অর্জুনের রথে শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণ নন, উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং হনুমান ও।

মহাভারতের কাহিনী অনুসারে জানা যায় একবার তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন এবং বজরংবলীর মধ্যে তর্ক শুরু হয়। তীরন্দাজ অর্জুন গর্ব করে বজরংবলী কে বলেন “আপনি নিজের বানর সেনা নিয়ে ত্রেতা যুগে সমুদ্রের উপর সেতু নির্মাণ করেছিলেন। আমি যদি আপনার জায়গায় থাকতাম তাহলে একা হাতে শুধু তীর ছুঁড়েই এমন সেতু তৈরি করতে পারতাম যা দিয়ে সবাই অনায়াসে সাগর পেরিয়ে যেতে পারত”। সেই সঙ্গে অর্জুন আরো বলেন তিনি বুঝতে পারেন না শ্রী রামচন্দ্র কেন নিজে এই ভাবে তীর দিয়ে সেতু নির্মাণ না করে বজরংবলী (Hanumanji in Kurukshetra) এবং তার সেনাদের উপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।

অর্জুনের এই প্রশ্ন শুনে বজরংবলী বলেন যে স্থানে অর্জুন দাঁড়িয়ে আছেন সেখানে যদি তীর দিয়ে সেতু তৈরি করা যায় তবে তা সমগ্র বানর সেনাদের তো দূর, শুধুমাত্র বজরংবলী শরীরের ভারই বহন করতে পারবে না। উভয়ের তর্ক শেষে সিদ্ধান্ত হয় যে অর্জুন তীর দিয়ে একটি সেতু তৈরি করবেন, এবং সেই সেতু যদি বজরংবলির দেহের ভার বহণ করতে না পারে তবে অর্জুন নিজে আগুনে প্রবেশ করবে। আর যদি বজরংবলী তিন পা সেতুতে ফেলার পরেও সেতু অক্ষত থাকে তবে বজরংবলীকে আগুনে প্রবেশ করতে হবে। শ্রী রামের নাম নিয়ে বজরংবলী সেতুর উপর প্রথম পা দিতেই সেই সেতু কাঁপতে শুরু করে, দ্বিতীয় পা ফেলার পর ভেঙে যাওয়ার মত আওয়াজ হয় এবং তৃতীয় পা ফেলার পর জল রক্তের মত লাল হয়ে যায়।

সেতুটি বজরংবলী (Hanumanji in Kurukshetra) দেহের ভার বহণ করতে না পারলেও যেহেতু বজরংবলী অর্জুনের শর্ত অনুসারে তার তৃতীয় পদক্ষেপটি সেতুর উপর রেখেছিলেন তাই অর্জুনের কথা অনুসারে তিনি আগুনে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীকৃষ্ণ জানান তিনি একটি কচ্ছপের রূপ নিয়ে এই সেতুটিকে নিজের পিঠে ধারণ করেছিলেন। বজরংবলী তার তৃতীয় পদক্ষেপটি কচ্ছপের পিঠে রেখেছিলেন বলেই জলের রং লাল হয়ে গিয়েছিল। শ্রীকৃষ্ণ বজরংবলীকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অর্জুনের রথের উপরের পতাকাটিকে ধরে থাকতে বলেন। কারণ শত্রুদের তীর সেই পতাকাকে বিদ্ধ করলেও বজরংবলী থাকার কারণে সেই পতাকা অক্ষত থাকবে এবং অর্জুন স্বমহিমায় যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবেন। কৃষ্ণের এই কথাকে মান্যতা দিয়েই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অর্জুনের রথের শিখরে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং হনুমান।