This particular Tibetan mantra realizes one’s being: তিব্বতী ধর্ম বিশ্বাসী মানুষদের কাছে সবথেকে জনপ্রিয় মন্ত্র হলো ‘ওম মণিপদ্মে হুম’। চারটি শব্দবিশিষ্ট এই মহামন্ত্র বেশিরভাগ তিব্বতী প্রার্থনা পতাকায় দেখা যায়। পাহাড়ে বেড়াতে গেলেই বিভিন্ন তিব্বতী মনাস্ট্রিতে এই মন্ত্র খোদাই করা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।এটি আসলে একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্ত্র। এই মন্ত্রটি অর্থ হলো ‘পদ্মের অন্তঃস্থলে থাকা রত্নের প্রশস্তি’ (Tibetan Mantra)। তিব্বতীরা এই মন্ত্রকে উচ্চারণ
করেন “OHM-MAH-NEE-PAHD-MAY-HUM” এই ভাবে। তিব্বতী প্রেয়ার হুইল বা জপযন্ত্রে এই মন্ত্র খোদাই করা থাকে। জপযন্ত্র ঘুরিয়ে এই মন্ত্রোচ্চারণ করে ঈশ্বরের উপাসনা করেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা। স্বয়ং দলাই লামা এই মন্ত্রের গুরুত্বের কথা জানিয়েছেন। বিশ্বাস করা হয় মানুষের ভিতরে থাকা শুদ্ধ ও পবিত্র অন্তরাত্মা বাইরের আমিত্বের সঙ্গে পরিচয় ঘটায় এই মন্ত্রের বলে।
এই মন্ত্রের প্রতিটি বক্তব্য আলাদা আলাদা অর্থ বহন করে। ওম মণি পদ্মে হুম’ মন্ত্রের অর্থ নিচে উল্লেখ করা হলো –
১) ওম- ওম ধ্বনি হলো বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের আদি শব্দ। এই ব্রহ্মাণ্ডের যে তরঙ্গ থাকে তাই ওম ধ্বনির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুসারে ওম শব্দটি আমাদের সব অহংকার দূর করে এক স্বর্গীয় শক্তিকে জাগিয়ে তোলে।
২) মা- এই মা ধ্বনির উচ্চারণ আমাদের ঈর্ষার বিনাশ ঘটিয়ে মনকে পবিত্র করে (Tibetan Mantra)।
৩) নি- নি ধ্বনিটি যাবতীয় কামনা বাসনার মুক্তি ঘটায় এবং মানুষকে ধৈর্য্যশীলতার শিক্ষা দেয়।
৪) পদ- এই মন্ত্রের পদ ধ্বনিটি সবকিছুকে সমান দৃষ্টিতে দেখার শক্তি প্রদান করে।
৫) মে- এই দুনিয়ায় যাবতীয় ভোগ্যবস্তু কিছুই আমার নিজের নয়। নির্দিষ্ট সময় পর আমাদের দেহ সহ সমস্ত কিছুই পঞ্চভূতে লীন হয়ে যাবে। এই বিশ্বাসকেই মনের মধ্যে জাগিয়ে তোলে মে ধ্বনিটি।
৬) হুম- এই ধ্বনি মনের মধ্যে থেকে ঘৃণা ও আক্রমণাত্মক মনোভাব দূর করে এবং জ্ঞানের আলোকে বিকশিত করে।
‘ওম মণি পদ্মে হুম’ মন্ত্রোচ্চারণের উপকারিতা সম্পর্কে বৌদ্ধ ধর্মে নানা কথা বলা হয়। বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুসারে এই মন্ত্রের উপকারিতা গুলি হলো –
- এই মন্ত্র জপ করলে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলি শান্ত হয়ে যায় (Tibetan Mantra)।
- এই মন্ত্র উচ্চারণ এর মাধ্যমে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সমস্ত মানুষ এক হতে পারবেন।
- এই মন্ত্র মন পরিষ্কার করে এবং সেই সঙ্গে মনঃসংযোগ বৃদ্ধি করতে বিশেষ সাহায্য করে।
- এই মন্ত্র শরীরের বিভিন্ন অংশে শক্তি প্রদান করে।
- এই মন্ত্র মনের ভিতর থেকে যাবতীয় নেগেটিভ চিন্তাভাবনা, ঈর্ষা, উদ্বেগ, ভয়, অবসাদ ইত্যাদি দূর করে।
- এই মন্ত্র জপ করলে নিজের উপলব্ধিতে বোঝা যায় পার্থিব দুনিয়া আসলে কিছুই নয়। শরীরের প্রতি আমরা এতো মোহ-মায়া করলেও তা আসলে আমাদের কোনো কাজে লাগে না।